April 18, 2024, 3:58 am
আহমদীয়া মুসলিম জামাতের পবিত্র প্রতিষ্ঠাতা প্রতিশ্রুত মসীহ ও মাহদী হযরত মির্যা গোলাম আহমদ কাদিয়ানী (আ.) নবী-রাসুলদের বিষয়ে এ নীতিগত শিক্ষা দিয়েছেন-
“ আমরা কখনও অন্য জাতির নবীগণের অবজ্ঞা করি না। বরং এটাই আমাদের ধর্ম-বিশ্বাস পৃথিবীতে বিভিন্ন জাতিতে যত নবী এসেছেন এবং কোটি কোটি লোক তাঁদেরকে মেনে নিয়েছে আর পৃথিবীর কোন অংশে তাঁদের ভালোবাসা ও মাহাত্ম্য প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। আর এ ভালোবাসা ও বিশ্বাসের সুদীর্ঘকাল পার হয়ে গেছে, সেক্ষেত্রে এ একটি প্রমাণই তাঁদের সত্যতার জন্য যথেষ্ট। কেননা যদি তাঁরা খোদার পক্ষ থেকে না হতেন তবে কোটি কোটি লোকের হৃদয়ে তাঁদের মর্যাদা প্রতিষ্ঠিত হতো না। খোদা তাঁর মনোনীত বান্দাগণের সম্মান কখনো অন্যকে দেন না। যদি কোন মিথ্যাবাদী তাঁদের আসনে বসতে চায় তাহলে শীঘ্রই তাকে ধ্বংস ও বিনাশ করে দেয়া হয়।” (পয়াগামে সুলেহ, পৃষ্ঠা-১৫)
গৌতম বুদ্ধ, তাঁর ধর্ম ও বিশ্বাস সম্পর্কে হযরত মির্যা গোলাম আহমদ কাদিয়ানী (আ.)-এর বক্তব্য হলো,
“গৌতম বুদ্ধকে শয়তান ধন-ধৌলত ও রাজত্বের প্রলোভন দিলে তাঁর মনে গৃহে
ফিরে যাবার ধারনার উদ্রেগ হয়েছিল। কিন্তু তিনি এর অনুসরণ করেন নি। তখন
শয়তান আবারও তার সকল পরিজন নিয়ে এক বিশেষ রাতে তাঁর নিকট আসে এবং ভয়াবহ রূপ
ধারন করে তাঁকে ভয় দেখায়। বুদ্ধ ওই শয়তানগুলোকে সাপের আকৃতিতে দেখতে
পাচ্ছিলেন, যারা মুখ দিয়ে বিষ ও আগুন উদগীরণ করছিল। কিন্তু বিষ তাঁর কাছে
এসে পুষ্পে পরিণত হয়ে যাচ্ছিল এবং আগুন তার চারদিকে বলয়ে পরিণত হচ্ছিল।
এভাবে শয়তান যখন সফল হতে পারলো না তখন সে তার ষোল জন কন্যাকে ডেকে বললো,
‘তোমরা বুদ্ধের সামনে তোমাদের রূপ প্রকাশ কর।’ কিন্তু এতেও তাঁর মনোবলে চির
ধরে নি এবং শয়তান বিফল মনোরত হয়। এরপর শয়তান আরো কিছু কৌশল অবলম্বন করে,
কিন্তু তাতেও বুদ্ধের দৃঢ়তার মুখে সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয় এবং গৌতম বুদ্ধ
ক্রমান্বয়ে উন্নত স্তরসমূহ অতিক্রম করতে থাকেন। অবশেষে এক দীর্ঘ রাতের
অবসানের অর্থাৎ কঠিন ও দীর্ঘস্থায়ী পরীক্ষার পর তিনি তাঁর শত্রু অর্থাৎ
শয়তানকে পরাস্ত করেন। ফলে তাঁর নিকট প্রকৃত জ্ঞানের আলো প্রতিভাত হয় এবং
প্রভাত উদিত হতেই অর্থাৎ সকল পরীক্ষা উত্তীর্ণ হয়ে তিনি সত্যিকার জ্ঞান
লাভ করেন। যে ভোরে সেই যুদ্ধের অবসান হয় সে ভোরটি ছিল বৌদ্ধ ধর্মের
জন্মদিন। সে সময় গৌতমের বয়স হয়েছিল পঁয়ত্রিশ বছর। আর তখনই তাঁকে বুদ্ধ
অর্থাৎ নূর বা জ্যোতিঃ উপাধিতে ভূষিত করা হয় এবং যে বৃক্ষের নিচে তিনি
বসেন, সেটি নূর বা জ্ঞানের বৃক্ষ বলে খ্যাতি লাভ করে।” (রুহানী খাযায়েন,
খন্ড মসীহ্ হিন্দস্থান ম্যায় পৃ-৬৮)
“ আমি বর্ণনা করে এসেছি, বুদ্ধ
শয়তানের অস্তিত্বেও বিশ্বাসী। তেমনি দোযখ, বেহেশত, ফেরেশতা এবং কিয়ামতেও
বিশ্বাসী ছিলেন। আর এ অভিযোগ, বুদ্ধ খোদার অস্তিত্বে বিশ্বাস করতেন না তা
ডাহা মিথ্যা। বরং বুদ্ধ প্রচলিত বেদ এবং হিন্দুদের শরীরী খোদাগুলোকে
স্বীকার করতেন না। নি:সন্দেহে তিনি বেদের বিরুদ্ধে কড়া সমালোচনা করেছেন।
বর্তমান বেদকে সত্য বলে স্বীকার করেন নি। এটিকে এক বিকৃত, প্রক্ষিপ্ত ও
পরিবর্তিত গ্রন্থ বলে মনে করতেন।” (রুহানী খাযায়েন, খন্ড মসীহ্ হিন্দস্থান
ম্যায় প-৮২)
“গৌতম বুদ্ধ এরূপ সন্ধি স্থাপনের ইচ্ছা করেছিলেন। তিনি
একথা বিশ্বাস করতেন না, বেদই সব কিছু এবং এর বাইরে কিছু নাই। তিনি জাতি,
দেশ এবং বংশের বৈশিষ্ট্য স্বীকার করতেন না। অর্থাৎ তাঁর ধর্ম-বিশ্বাস এরূপ
ছিল না যে, বেদই সব কিছু সীমাবদ্ধ আর এ ভাষায় এবং এ দেশেই ও এ ব্রাহ্মণরাই
পরমেশ্বরের বাণী পাওয়ার জন্য তাঁর আদালতে চিরকালের জন্য রেজিস্ট্রিকৃত হয়ে
রয়েছে। তিনি এ মতবিরোধের দরুন বড় কষ্ট ভোগ করেছিলেন এবং তাঁকে নাস্তিক ও
নাস্তিকমতবাদধারী আখ্যা দেয়া হয়েছিল, যেভাবে আজকাল ইউরোপ ও আমেরিকার সেই
সকল গবেষক পাদ্রী সাহেবদের মতে তারা সকলেই নাস্তিক যারা হযরত ঈসা (আ.)-এর
ঈশ্বরত্বের স্বীকার করে না এবং একথা মানতে রাজী হয় না যে, ঈশ্বর ক্রুশ
বিদ্ধ হতে পারেন। সুতরাং বুদ্ধেকেও এ ধরনেরই নাস্তিক সাব্যস্ত করা হয়েছিল।
যেহেতু সর্বসাধারণের মাঝে ঘৃণা জন্মাবার জন্য তাঁর প্রতি অনেক অপবাদ আরোপ
করা হয়েছিল। সেজন্য দৃষ্ট বিরুদ্ধবাদীদের রীতি অনুযায়ী অবশেষে বুদ্ধকে তাঁর
দেশ ও মাতৃভূমি আর্যবর্ত্ত থেকে বের করে দেয়া হয়েছিল। তখন পর্যন্ত
হিন্দুরা বৌদ্ধধর্ম ও এর সফলতাকে অত্যন্ত ঘৃণা ও অবজ্ঞার চোখে দেখে থাকতো।
কিন্তু হযরত ঈসা(আ.)-এর উক্তি ‘নিজ মাতৃভূমি ছ্ড়াা নবী অন্যত্র অপমানিত হন
না।’ অনুযায়ী বুদ্ধ অন্য দেশে হিজরত করে বড় সফলতা লাভ করেছিলেন। বলা হয়
পৃথিবীর তিন ভাগের একভাগ বৌদ্ধধর্মে ভরে গেছে।” (রূহানী খাযায়েন, ২৩ খন্ড,
পয়গামে সুলেহ, পৃ. ১৩)
তিনি (আ.) আরও বলেন,
“হযরত মূসা (আ.) ও
হযরত ঈসা (আ.) এবং অন্যান্য নবী-রসূল সবাই যে পবিত্র, সম্মানিত ও খোদার
মনোনীত মহাপুরুষ ছিলেন এ কথা ঘোষণা করা আর এ স্বীকারোক্তি জগতময় প্রচার করা
আমি আমার জন্য একটি সৌভাগ্য বলে মনে করি। একইভাবে খোদা তা’লা যেসব
সম্মানিত মনীষীদের মাধ্যমে তাঁর পবিত্র পথ-নির্দেশনা আর্যবর্তে অবতীর্ণ
করেন আর পরবর্তীতে আগমনকারী আর্যদের যেসব পবিত্র বুযুর্গ ছিলেন যেমন রাজা
রামচন্দ্র ও শ্রী কৃষ্ণ- এরা সবাই পবিত্র মানুষ ছিলেন এরা সেসব মানুষের
অন্তর্ভুক্ত ছিলেন যাদের প্রতি খোদার অনুগ্রহ সদা বিরাজমান। …লক্ষ্য করে
দেখ, এই শিক্ষা কত চমৎকার যা শান্তি-সৌহার্দ্যরে ভিত্তি রচনা করে এবং সব
জাতিকে এক জাতিতে পরিণত করতে চায় অর্থাৎ অন্যান্য জাতির সম্মানিত
ব্যক্তিবর্গকে শ্রদ্ধাভরে স্মরণ কর।” (চশমায়ে মারেফাত; রূহানী খাযায়েন: ২৩শ
খ-, পৃষ্ঠা- ৩৮৩)
হযরত মির্যা বশিরুদ্দিন মাহমুদ আহমদ খলিফাতুল মসীহ সানী (রা) গৌতম বুদ্ধ সম্পর্কে বলেন,
“খোদা তা’লাকে পেয়ে সৃষ্টির সাথে ভালোবাসা প্রর্দশনকারীদের মধ্যে হযরত
ইব্রাহিম (আ.), হযরত মূসা(আ.), হযরত ঈসা(আ.) হযরত কৃষ্ণ (আ.), হযরত
রামচন্দ্র(আ.) হযরত জরাতুষ্ট ছিলেন। আর আমার মতে হযরত বুদ্ধ(আ.), হযরত
কনফুসিয়াস(আ.) ও নবীদের সর্দার হযরত মুহাম্মদ(স.)এর ক্ষেত্রেও ঘটনা একই
ছিল। তাঁেদর সবার দৃষ্টান্ত আমাদের সামনে রয়েছে। তাঁরা যেভাবে আর যে উত্তম
পন্থায় মানব জাতি ও অন্যান্য সৃষ্টির সেবা করেছেন এর দৃষ্টান্ত অন্য কোথাও
পাওয়া যাবে না। তাঁদের বিপরীতে এমন কাউকে উপস্থাপন করা যাবে না যে সৃষ্টিকে
ভালোবেসে খোদা তা’লাকে পেয়েছে।” (তফসীরে কবীর, প্রথম খন্ড, পৃ-১৩৪)
তিনি (রা.) আরও বলেন,
“মোটকথা সে (এক মুসলমান) যে দেশে যায় তার শির গর্বে উচু হয়ে যায়। তার হৃদয়
এ আনন্দে পরিতৃপ্ত হয় আমার কিতাবে যা কিছু বলা হয়েছিল এটা আক্ষরিকভাবেও
প্রমাণিত হয়েছে। কিন্তু এক খৃষ্টান, এক ইহুদী ও এক হিন্দু যে দেশেই যায় মুখ
বিষন্নতায় কালো হয়ে যায়। সে মধ্যপ্রাচ্যে যায় আর শুনে হযরত মুহাম্মদ(স.)
সবচে বড় নবী তখন তার হৃদয়ে আগুন লেগে যায়। সে বার্মায় যায় আর শুনে বুদ্ধ
নবী ছিলেন তখন সে কান্নাকাটি শুরু করে দেয়। ভারতে শুনে কৃষ্ণ নবী ছিলেন তখন
তার উপর পাগলামী ভর করে। গ্রীকে যখন যায় আর সে জানতে পারে সেখানে সক্রেটিস
এসেছিলেন তখন সে চিৎকার করতে থাকে। এক কথায় সে যে দেশেই যায় তার উপর এক
বিপদ আপতিত হয়। কিন্তু এক মুসলমান যে দেশেই যায় সে যার পর নাই আনন্দিত হয়।
আর প্রত্যেক দেশে এ শিক্ষা তার শির উচু ও গর্বের কারণ হয়ে দাড়ায়।” (তফসীরে
কবীর, সপ্তম খন্ড, পৃ-৪৩)
তিনি (রা.) আরো বলেন,
“এটা এমন এক নীতি
যার পরিপন্থি একটি দৃষ্টান্তও জগতে পাওয়া যায় না। যখন কোন ধর্মীয় সম্প্রদায়
অধপতিত হয়েছে সর্বদা কোন নবীর মাধ্যমে তারা পুনর্জীবিত হয়েছে। এটা ছাড়া
কোন জাতি আজ পর্যন্ত জীবিত হতে পারে নি। ইতিহাস বলে প্রথমে হযরত কৃষ্ণ(আ.)
আসেন পরে হযরত রামচন্দ্র(আ.) আসেন অথবা হিন্দুদের ধারণানুসারে প্রথমে হযরত
রামচন্দ্র(আ.) পরে হযরত কৃষ্ণ(আ.) আসেন। দুটোর মাঝে যেটাই মনে করেন। আমাদের
মতে প্রথমে হযরত কৃষ্ণ(আ.) এর মাধ্যমে হিন্দু জাতি উন্নতি লাভ করেছে। পরে
এক দীর্ঘ সময় পার হওয়ার পর আবার অধপতিতি হয়েছে। আর হযরত রামচন্দ্র(আ.)
আল্লাহর পক্ষ থেকে প্রেরিত হয়ে আসার পর এটা দূর হয়েছে। অথবা হিন্দু
ধর্মানুসারে প্রথমে হযরত রামচন্দ্র(আ.) এর মাধ্যমে তাদের উন্নতি হয়েছে। আর
পরে হযরত কৃষ্ণ(আ.) এটাকে সর্বোচ্চ পর্যন্ত নিয়ে গেছেন। এরপর তারা আবার
অধপতিত হয়েছে। আল্লাহ তালা তখন হযরত বুদ্ধ(আ.)কে মানুষের হেদায়তের জন্য
প্রেরণ করেন যার প্রতি ঈমান এনে লোকদের অধপতিত অবস্থা দূর হয়।” (তফসীরে
কবীর, নবম খন্ড, পৃ-৫৫৭)
তিনি (রা.) আরো বলেন,
“যেহেতু আজ মুসলমান
ছাড়া বাকি সমস্ত জাতি জীবন্ত ধর্ম থেকে অনেক দূরে চলে গেছে তাই হিন্দুরা
যদি বর্তমানে শুধুমাত্র জ্ঞান-বিজ্ঞান ও কলাকৌশলকে কাজে লাগিয়ে উন্নতি করতে
চায় তাহলে তারা করতে পারে। কেননা তারা সত্য ধর্মের প্রতি আরোপিত নয়। যখন
তারা এক সত্য ধর্মের প্রতি আরোপিত ছিল, আর যতদিন পর্যন্ত হিন্দুধর্ম জীবিত
ছিল তখন প্রথমে হযরত কৃষ্ণ(আ.) এসেছেন যার প্রতি ঈমান এনে তারা উন্নতি লাভ
করেছে। পরে হযরত রাম(আ.) এসেছেন যার প্রতি ঈমান এনে তারা উন্নতি লাভ করেছে।
পরে হযরত বুদ্ধ এসেছেন যার প্রতি ঈমান এনে তারা আবার উন্নতি লাভ করেছে।
অথবা হিন্দুদের মতে প্রথমে হযরত রাম(আ.)এসেছেন, পরে হযরত কৃষ্ণ(আ.)এসেছেন
এবং পরে হযরত বুদ্ধ(আ.)এসেছেন। তাঁদের মাধ্যমে তারা উন্নতি লাভ করেছে।
কিন্তু হযরত বুদ্ধ(আ.)এর পর যেহেতু হিন্দুধর্ম এবং পরে বৌদ্ধদ্ধধর্মও রহিত
হয়ে যায়। তাই আজ যদি হিন্দুধর্মাবলম্বীরা জাগতিক উপায়-উপকরণের মাধ্যমে
উন্নতি করতে চায় তাহলে তারা তা করতে পারবে। এতে কোন বাধাপ্রাপ্ত হবে না।
কিন্তু মুসলমান আজ কখনও জাগতিক উপায় উপকরণে উন্নতি করতে পারবে না। কেননা
মুসলমানরা এক সত্য ধর্মকে মান্যকারী।” (তফসীরে কবীর, নবম খন্ড, পৃ-৫৫৮)
অর্থাৎ হযরত মুসলেহ মাওউদ(রা.) হযরত গৌতম বুদ্ধ(আ.)কে তাঁর তফসীরে একজন নবী বলে উল্লেখ করেছেন।
আমাদের জামাতের চতুর্থ খলিফা হযরত মির্যা তাহের আহমদ(রাহে.)- তাঁর বিখ্যাত
বই Revelation, Rationality, Knowledge and Truth এ হযরত গৌতম বুদ্ধ(আ.)
সম্পর্কে বলেন,
“আমরা পূর্ণ বিশ্বাস, দৃঢ়তা এবং আস্থার সাথে বলতে পারি,
বৌদ্ধধর্ম খোদা প্রদত্ত একটি ধর্ম। আমরা এ সত্যের ওপর বিশ্বাস রাখি, বৌদ্ধ
ধর্মের প্রতিষ্ঠাতা কোনভাবেই নাস্তিক ছিলেন না। বরং তিনি এমন এক
ব্যক্তিত্ব ছিলেন যাঁকে স্বয়ং খোদা নিজের বাণী পৌঁছানোর জন্য মনোনীত
করেছিলেন। ঠিক সেভাবে যেভাবে অন্যান্য নবী-রসূল বা অবতারদের প্রেরণ করা
হয়েছিল।”
তিনি (রাহে.) ঐ পুস্তকে আরও বলেন,
“পশ্চিমা পন্ডিতদের এই
সাধারণ প্রবণতার বিপরীতে হযরত মির্যা গোলাম আহমদ কাদিয়ানী(আ.) (১৮৩৫-১৯০৮)
এক একক আওয়াজ উঠান এবং এক সম্পূর্ণ বিপরীত মত উপস্থাপন করেন। তিনি(আ.) দাবি
করেন, মহাত্মা বুদ্ধ (আ.) খোদার অস্তিত্বে বিশ্বাসী ছিলেন যাঁকে আল্লাহ
তালা বিশেষ উদ্দেশ্য প্রেরণ করেছিলেন। তিনি প্রমাণ করেছেন অন্যান্য নবীদের
মত হযরত বুদ্ধ(আ.) ফেরেশতা, জান্নাত, জাহান্নাম, পরকাল ও শয়তানের অস্তিত্বে
বিশ্বাসী ছিলেন। এ কারণে এই অপবাদ হযরত বুদ্ধ(আ.) আল্লাহর অস্তিত্বে
বিশ্বাস করতেন না -এটা সম্পূর্ণরূপে মিথ্যা রটনা। হযরত বুদ্ধ(আ.) মূলত
বেদান্তের ( ঐ ধর্মীয় বিশ্বাস ও নীতি যা হিন্দুদের পবিত্র গ্রন্থ বেদে
বিদ্যমান ছিল) অস্বীকারকারী ছিলেন। আর হিন্দদের উপস্থাপিত শারিরী ঈশ্বরের
অস্বীকারকারী ছিলেন। হযরত বুদ্ধ(আ.) ব্রাহ্মণদের খুবই দোষারোপ করেছেন যারা
নিজেদের ভুল ব্যাখ্যা দ্বারা হিন্দুধর্মের ঐশী শিক্ষাগুলোকে বিকৃত করেছে। ”
Leave a Reply